দখিনের খবর ডেস্ক ॥ বরিশালে শবেবরাত ও রমজান মাসকে সামনে রেখে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। মুরগি, গরুর মাংস এবং চিনি আগের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে ক্রেতাদের এছাড়া সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে সবজির দাম। কয়েক মাস ধরে বাড়তে থাকা চালের দাম এখনো পড়েনি। পাশাপাশি ভোজ্য তেল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও চড়া। শনিবার (২০ মার্চ) সকালে নগরীর বিভিন্ন কাচা বাজারে গিয়ে দেখা যায়, যেসব সবজি গত দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১০ থেকে ৩০ টাকায়, এখন দাম বড়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শিম ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০, ফুলকপি ২০ টাকা থেকে ৩০, বেগুন ৩০ টাকা থেকে ৪০, চিচিঙ্গা ৩০ টাকা থেকে ৪০, শসা ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৪০, মটরশুঁটি ৬০ টাকা থেকে বেড়ে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি শিম টমেটো ২০ থেকে ২৫, শালগম ১০, ধনেপাতা ৫০, কাঁচামরিচ ৪০, বাঁধাকপি ১৫, বরবটি ৬০, গাজর ৩০, পেঁপে ২০, মিষ্টি কুমড়া ২০, করলা ৬০, আলু ১৮, পেঁয়াজ ৪০, আদা ৭০-৭৫, মসুর ডাল (বড়দানা) ৭০ থেকে ৭৫, রসুন ১১৫ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চৌমাথা কাচা বাজারে সবজি বিক্রেতা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সবজির সরবরাহ অনেক কম। তাই দামও বেশি। তাছাড়া গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চিনির দাম কেজিপ্রতি ৬৬ থেকে বেড়ে ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় খুচরা বাজারে বিক্রি হতে দেখা গেছে। প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের দাম ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা। প্যাকেট আটার দাম ৩২ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বেসন ৮০ থেকে ১২০, মুড়ি ১২০ ও চিড়া ৬০ থেকে ৬৫ টাকা টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে।’ রমজান মাসে ইফতারে ছোলা ও খেজুর অন্যতম একটি উপাদান। এ মাসকে ঘিরে চাহিদাও থাকে ব্যাপক। খুচরা বাজারে প্রকারভেদে ২৫০ থেকে ৯৫০ টাকা প্রতি কেজি খেজুর বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে ছোলা ৭০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সরকারি ও বেসরকারি উভয় পর্যায়ে চাল আমদানি করা হলেও খুচরা বাজারে তেমন প্রভাব পড়েনি। বাজারে সরু মিনিকেট চাল ৬২ থেকে ৬৪ টাকা, নাজিরশাইল ৭০ বিআর-২৮ চাল ৫৪ টাকা, পাইজাম ৪৮ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুরগির দাম। কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা দরে। ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১৫০ টাকা চাইছেন, যা আগের চেয়ে ১০ টাকা বেশি। কক বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে। চৌমাথা বাজারে বিক্রেতারা ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১৫০ টাকা চাইছেন, যা আগের চেয়ে ১০টাকা বেশি। ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে হালিপ্রতি ৩০ টাকায়। সপ্তাহ দুয়েক আগেও ডিমের হালি ছিল ২৮ টাকা। চৌমাথা বাজারের গ্রামীণ মুরগি ঘর নামের দোকানের মালিক শওকত হোসেন বলেন, ‘মুরগির চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ঘাটতি দেখা দিলে খামারিরা কিছুটা দাম বাড়িয়ে দেন। সামনে শবে বরাত ও রমজান মাস। মুরগির দাম আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুরগির পাশাপাশি গরুর মাংসের দামও বেড়েছে। বাজার ভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে আজ গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৬০০ টাকা দরে। খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৯০০ টাকায়। নগরীর বাজার রোডের পুরান বাজারের মাংস ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম জানান, ‘গরুর দাম বেড়েছে। আগে যে গরু বিক্রি হয়েছে ৫০ হাজার টাকায়, এখন তা ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। তাই গরুর মাংস কেজি প্রতি ২০ টাকা বেড়েছে।’ মাছের দামও কিছুটা বেড়েছে। বড় শোল মাছ প্রতি কেজি আগে ৬৫০ টাকার কাছাকাছি ছিল, এখন ৭০০ টাকা। চিংড়ির কেজিপ্রতি দর ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়ে এখন আকারভেদে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রুই-কাতলা, বোয়াল, তেলাপিয়া, চাষের কই, শিং, মাগুর মাছও তুলনামূলক কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।
Leave a Reply